সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

দুরন্ত ভালোবাসা


বইটা খুলে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে বসে আছে মিলি।বইয়ের উপর লেখা,উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন,প্রথম পত্র।এতোটুকু ছাড়া আর কিছুই পড়ছে না মিলি। বইটা খুলতেইচ্ছা করছে না।এ বছর কলেজে উঠল মিলি।মনটা ভাল অথবা খারাপ এতোটুকুই বুঝতে চেষ্টা করছে। এই বয়সের মেয়েদের মন, অকারণেই খারাপ হয়ে যায়। আবার অল্প কিছুতেই মুগ্ধ হয়ে, ভাল হয়ে যায়।নিজেকে বুঝতে বুঝতে অনেকটা সময় পাড় হয়ে যায়।তবে আজকের ঘটনাটায় আসলেই কি মন খারাপ করবে, না হেসে হেসে ওড়না দিয়ে মাথা ঢেকে,সাইফকে ফোন দিয়ে বলবে, " জানেন ভাইয়া, আমাকে দেখতেবউয়ের মত লাগছে। " সাইফ কিছুই বলবে না। চুপ করে থাকবে। কিছুক্ষণ পর ফোন কেটে দিবে। আবার একটু পরে নিজেই ফোন দিয়ে বলবে, দেখো, মিলি, এসব কথা বলার জন্য, তুমি আমাকে ফোন দাও কেন? আমাকে আর এসব বলার জন্য আর ফোন দিবে না। মিলি বলবে, আচ্ছা। সাইফ কিছুক্ষণ চুপ থেকে, তারপর বলবে, আমি কি রেখে দিব? - আমি তো জানিনা ভাইয়া। আপনার ইচ্ছা। - আচ্ছা রাখি। পড়াশুনা কর। ইন্টারের পড়াশুনা অনেক কঠিন।

কল কেটে দিবে সাইফ। আর মিলি মাথার উপর থেকে, ওড়না নামিয়ে হাসবে। শব্দ করে হাসবে।সাইফ অনেক বোকাসোকা একটা ছেলে। বোকা ছেলেটাকে জ্বালাতে অনেক মজা লাগে।চালাক মানুষকে জ্বালাতে কোন মজা নেই।উল্টা মেয়ে পেয়ে , কতগুলো খারাপ কথাবলে বসে থাকবে। মিলির হাসির শব্দ শুনে মা চিৎকার করবে, কি হইছে? মনে এতো সুখ কেন?আমাদের কারও মনে তো এতো সুখ নাই। তোর এতো সুখ আসে কই থেকে? মরতে পারিস না?

মিলির এসব শুনে খারাপ লাগবে না। এসব শুনে শুনে কানে সয়ে গেছে। মিলি আবার হাসবে শব্দ করে।সাইফের বোকা বোকা কথাতেই, মুগ্ধ হয়ে যাবে। প্রাণ খুলে হাসবে।বেশ কয়েকদিন ধরে অন্য এক কারণে একবার মুগ্ধ হচ্ছে।একটা কোচিং এ পড়ছে মিলি। বাসায় টিচার রেখে পড়ার মত টাকামা দিবে না। তাই কোচিং এ ব্যাচে পড়ছে। একটা ভাইয়ারসায়ন পড়াচ্ছে। আর মিলি মুগ্ধ হয়ে দেখে তাকে। কতসহজ করে জিনিস গুলো বুঝিয়ে দিচ্ছে। এসব জিনিস গত ২বছরে, আর কলেজের ক্লাসে পড়লেও, এতো সহজ করে কেউ বুঝিয়ে দিতে পারে নি। কি সুন্দর করে বুদ্ধি শিখিয়ে দিল, কিভাবে খুব সহজে, কোন মৌলের শেষ কক্ষপথে কতটা ইলেকট্রন আছে, বের করা যাবে। কোন যৌগের কি সংকরন, তাও বের করা যাবে। কার অষ্টক সংকোচন, কার সম্প্রসারণ, তাও নিমিষেই বের হয়ে যাবে। মুখস্থের ধারে কাছেও যেতে হয় না। একারণে গত কয়েকদিন ধরে, রসায়ন বইটা পড়তে অনেক ভাল লাগছে। সাইফ ভাইয়াকে ফোন দিয়ে মিলি বলে, ভাইয়া জানেন, আমার ইদানীং রসায়ন পড়তে অনেক ভাল লাগে। - তাই? তাহলে তো খুব ভাল। - কেন ভাল লাগে জানেন?-কেন? - একটা ভাইয়া পড়ায়। এতো সহজ করে। আমি শুধুমুগ্ধ হয়ে দেখিই।

কেমন লাগলো আজকের গল্পটি, কমেন্ট করে জানাবেন।শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের গল্পটি পড়ার সুযোগ দিন

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসা

নীলা কোথা থেকে যেন হন্তদন্ত হয়ে এসে। নীলাঃ এই আবির জানিস? আমার বিয়ে ঠিক হইছে। আবিরঃ Wow what a great news! খাওয়াবি কবে? নীলাঃ মানে? আবিরঃ মানে হইলো পার্টি কবে? নীলাঃ তোর কোনো অনুভূতি নাই? আমি তোর থেকে দূরে চলে যাবো এটা নিয়া? আবিরঃ কিসের অনুভূতি? ক্যান অনুভূতি? কেমন অনুভূতি? নীলাঃ এই যে আমরা আর আগের মত দেখা করতে পারবো না আড্ডা দিতে পারবো না এটা নিয়া! আবিরঃ হুম। কিন্তু আমি তোর বিয়ের পর প্রত্যেক দিন মাঝ রাতে তোকে নিয়ে ফাঁকা রাস্তায় হাটতে বের হবো কিন্তু! নীলাঃ হ আর আমার যে স্বামী হবে সে তো বসে বসে ললিপপ খাবে 😡😡 আবিরঃ না তো, সেও যাবে। নীলাঃ ৩ জন? আবিরঃ না ২ জন।😂 নীলাঃ কে কে? আবিরঃ তুই আর আমি। নীলাঃ আর আমার স্বামী? আবিরঃ সে তো থাকবেই। নীলাঃ কেমনে কি? আজিব হুর 😡😡😡 নীলা রেগে ওখান থেকে উঠে চলে যায়। আবিরের এই সব ফাইজলামি মার্কা কথা শুনে খুব খারাপ লাগছিলো। বাসায় গিয়েই রুমের দরজা বন্ধ করে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কান্না শুরু করে। নীলা আবিরকে ভালবাসে আর আবিরের ওর প্রতি কোনো অনুভূতি নেই! দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে ওর। নীলা আর আবির খুব ভালো বন্ধু। না না ওরা এক বয়সী না আবির নীলার থেকে ৫ বছরের বড়। তবুও কিভাব...

রিকসাওয়ালার ভালোবাসা

রিক্সা চালাই। বিয়ে করেছিলাম আজ থেকে এক বছর আগে।আমার মতই এক গরীবের মেয়েকে বউ করে এনেছিলাম আমি। , অভাবের সংসারটা খুব সুন্দর করে সাজিয়ে নিয়েছিলো ও।বুঝতে পারি বউ আমায় খুব ভালবাসে। আমি যখন রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরি,ও আমার জন্য গোছলের পানি তুলে দেয়।মাঝেমাঝে আমিও অবশ্য তুলে দেই। বাড়িতে কারেন্ট নাই,খেতে বসলে ও পাখা দিয়ে বাতাস করে। গরমের রাতে দুজনে অদল বদল করে পাখা দিয়ে বাতাস করি,ভবিষ্যৎটাকে সাজানোর গল্প করি দুজনে। গল্প করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে যেতাম বুঝতে পারতামনা। , রিক্সায় বড়বড় সাহেবরা তাদের বউকে নিয়ে উঠত। দুজনে মিলে অনেক গল্প করত। সাহেবদের কাছে শুনতাম তারা যেদিন বিয়ে করেছে সেদিন আসলে তারা নাকি অনুষ্ঠান, পার্টি না কি জানি করে ।এই সব আমার জানা নেই। যখন শুনতাম আমারো ইচ্ছে করত বউকে একটা শাড়ী কিনে দিতে।বউকে যে খুব ভালবাসি আমি। কিন্তু পারিনা।অভাবের সংসার, দিন আনি দিন খাই।তাই একটা মাটির ব্যাংক কিনেছিলাম।ওটাতে রোজ দু'চার টাকা করে ফেলতাম। , দেখতে দেখতে অভাবের সংসারে আজ একটা বছর হয়েগেল। আজ সকালে রিক্সা নিয়ে বের হবার আগে বউ যখন রান্না ঘরে গেল তখন বউকে না জানিয়ে লুকিয়ে রাখা মাটির ব্যাংকটা বের করে ভেঙ্গে...